Header Ads

Header ADS

দুষ্টু - মিষ্টি ভালোবাসার গল্প

গল্প:- রোমান্টিক মেয়ে
শেষ পার্ট
- এইযে মিষ্টি বউ ব্যথা গেছে?
- তুই আবার বউ বলছিস?
- আগে বল ব্যথা আছে নাকি?
- একটু আছে,,
- চিন্তা করে না বউ, ঠিক হয়ে যাবে।
- আমি তোর কোন জনমের বউ।
- এই জীবনের এবং ভবিষ্যৎ জীবনের।
- দ্যাখ বাড়াবাড়ি করবি না, আমার বয়ফ্রেন্ড আছে।
- তাতে কি হইছে, ব্রেকআপ করে দে, আমার বউ হয়ে যা।
- আরে আমি তোর বড়, আমার পেছন ছেড়ে দে প্লিজ।
- বড় হইলে কি বিয়ে করা যায় না নাকি?
- জানি না, তুই এখান থেকে চলে যা, সহ‍্য হয় না তোকে।
- যাব না। আই লাভ ইউ বউ। ( পাশের গাছ থেকে গোলাপ ফুল দিয়ে)
- তোকে আমি,, ওই দাড়া।
- আমাকে ধরতে পারবি না, তোর পায়ে ব্যথা পাবি।
- ধ্যাত,,, ( ঘাসে বসে পড়ছে)
- এই তুই না অনেক সুন্দর (ওর কাছে এসে চোখে চোখ রেখে বললাম)
- চোখ কিন্তু গেলে দিব।
- তোর চোখ টা দে আমার টা নে যাতে সবসময় তোকে দেখতে পারি।
- তোকে আজ মেরেই ফেলবো ( কাছে এসে গলায় ধরছে)
- তাই নাকি? ( গলা ছাড়িয়ে জড়িয়ে ধরলাম)
- (অতঃপর ঠাস)
.
এক বালতি রাগ নিয়ে চলে গেল। তুই ভুলে যাস না আমি ছেলে,, তোর চেয়ে শক্তি আর লম্বা সব দিক দিয়েই আমি বেশী,, আমার সাথে পারবি না। আমার মিষ্টি বউ।
.
তার পরের দিন থেকে ঠিক এই রকম ভাবে প্রতিদিন আমি ওকে কোনো ছুতো দিয়ে আমার সাথে নিয়ে যেতাম আর ফুল দিয়ে প্রপোজ করতাম। আর বাসায়ও আমি ওর পেছনে লেগে থাকতাম সবসময়, ১ মিনিটের জন্যও পিছু ছাড়তাম না।
.
ও আবার কলেজে যেতো প্রতিদিন, আর আমি ওকে নিয়ে যেতাম আর নিয়ে আসতাম।
এভাবে চলে গেল ২০ দিন।
কিন্তু আমি এখনো আমার ভালবাসার কোনো উন্নতি দেখতে পেলাম না।
.
সবসময় পেছনে পরে থাকি, কিন্তু এখনো একটু জায়গা করে নিতে পারলাম না ওর মনে।
একুশ দিনের দিন,,
ভাবলাম কতগুলো চুড়ি আরেক টা শাড়ি কিনে দেই ওকে।
.
তাই সকালে বের হলাম একটু ঘোরাঘুরি করে ১১টার সময় বাসায় ফিরে আসলাম। দেখি ওর রুমে বসে টিভি দেখছে।
- আমার বউটা কি করছে?
- তুই এ ঘরে আসছিস কেন?
- এ মা, আমার বউয়ের ঘরে আমি আসবো না তো কে আসবো?
- দ্যাখ, মাথা গরম করবি না, এমনই খুব রাগ উঠছে এখন।
- কেন?
- তোর জেনে লাভ কি? বেরিয়ে যা বলছি,,
- এইনে তোর জন্য আনছিলাম,, নীল শাড়ি, আর সবুজ, নীল, লাল অনেক গুলো চুড়ি, ধর ( হাতে দিলাম)
- তোকে এগুলো আনতে বলছি আমি? ( নিচে ফেলে দিল)
- নিবি না বললেই পারতি, ফেলে দিলি কেন? ( ওগুলো উঠিয়ে বিছানার একপাশে রেখে চলে আসলাম)
.
আমার মনে হয় কপাল খারাপ, এখনো ওর মনে জায়গা করে নিতে পারলাম না। তাই ভাবলাম ওকে আর বিরক্ত করবো না। আর চার দিন আছি ওর সাথে ভালো হয়েই থাকবো। ওর পেছনে লেগে নিজেকে ওর কাছে ছোট করে লাভ নেই।
.
তার পরের দিন, আজ সকাল ১০টা বেজে গেল এখনো উঠি নাই বিছানা ছেড়ে, চোখ চেয়ে শুয়ে আছি। সাড়ে দশটার সময় খালা আসলো,,,
- নীল উঠতো, এতো সময় কেউ ঘুমায়?
- আচ্ছা।
- খাওয়া হলে প্রেমাকে কে নিয়ে একটু মার্কেটে যাস।
- আচ্ছা দেখছি।
.
খেয়ে নিয়ে প্রেমাকে নিয়ে মার্কেটে গেলাম। রিক্সা করে আসছি, তবুও আজ আর একটা কথা বলিনি। কেনার সময় ওর যেটা খুশি কিনেছে আমি কিছু বলিনি, একটু পর একটা দোকানের সামনে গিয়ে হা করে দাড়িয়ে পড়লো।
- আপু কি হইছে এখানে দাঁড়ালেন কেন? ( ওর কথাই এখন মেনে চলছি)
- এমনি,,
- চলুন ( ওর দৃষ্টি ভেদ করে তাকিয়ে দেখি ও দুটি কাপলদের দিকে তাকিয়ে আছে দোকানের ভেতর)
- একটু দাঁড়া, একটা ফোন করবো,
- তাড়াতাড়ি,
.
ফোন বের করে কল দিতেই সেই পাশের কাপলদের মধ্যে ছেলেটির ফোন বেজে উঠলো,, ছেলে বোধ হয় এখনো ওকে দেখেনি। তাই ফোন কেটে দিল ওর জিএফ এর সামনে।
.
প্রেমা আপু আরও কয়েক বার দিল ফোন, যে কয়েক বার দিল সেই কয়েক বার ওই ছেলের ফোন বেজেছে আর কেটে দিছে।
বুঝতে পারলাম কি হয়েছে,, ওই ছেলেটাই বোধ হয় ওর বয়ফ্রেন্ড ছিলো,, আর এখন আপুর অনুপস্থিতিতে ওই মেয়েকে নিয়ে ঘুরতে বের হইছে।
.
- নীল এই নীল, ব্যাগ গুলো ধর তো।
- আচ্ছা দিন,,
.
আরে বাবা,, কি মেয়েরে এটা, ব্যাগ গুলো আমার কাছে দিয়ে দৌড়ে গিয়ে সবার সামনে ওই পোলারে ঠাস কইরা একটা দিল, তারপর আবার আমার দিকে আসছে, এইরে আবার যে কি করে,,
.
- নীল চল এখান থেকে ( আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে চললো)
.
এটা কি হলো, হটাৎ আমার হাত ধরলো কেন? বাঘিনীটার আবার কি হলো, ওর কাছে যেতে দেয়নি এখন আবার হাত ধরছে,, ছোট ভাইয়ের হাত ধরতেই পারে তাই না।
.
তারপর বাসায় এসে পড়লাম। বাসায় এসে ফ্রেস হলাম, তারপর রুমে যাওয়া মাত্রই কোথা থেকে এসে আমার কাছে বসে পড়লো ধপাস করে। আমি কিছু বললাম না, আমি আমার চিন্তায় ডুবে রইলাম।
.
তারপরের দিন,,
আমার যাওয়ার সময় হয়ে গেছে প্রায়। আজকে দিয়ে আর মাত্র চার দিন আছি, তারপরই ফিরে যাব আবার ঢাকায়।
সবার চাওয়া পাওয়া বোধ হয় পূর্ণ হয় না। কারও অপূর্ণও হয়। তেমন টা আমার হইছে।
.
সেদিন আর প্রেমার কাছে যাইনি। নিজের রুমেই বসে টিভি দেখছি। শুধু একবার দরজার দিকে তাকিয়ে ছিলাম, আর ওমনি কে যেন দরজার কাছ থেকে সরে গেল, আমার এতো কিছু জেনে দরকার নেই কে ছিলো আর না ছিলো " যত্তোসব।
.
তার পর দুই দিন গেল, এ দুই দিনে প্রেমা আমার কাছে আসছিল শুধু ডাকার জন্য, এখানে ওখানে যেতে আর খেতে। কিন্তু এ দুই দিন আর খালাকে আসতে দিল না আমার কাছে, কিন্তু কেন?
.
চব্বিশ দিনের দিন বিকেলে রুমে বসে মিনি মিলিটারি গেমস খেলছি। হটাৎ ফোনটা কে যেন ছু মেরে কেড়ে নিল। দেখি প্রেমা,, আর আজ সেই আমার দেওয়া শাড়ি আর চুড়ি পরে আসছে। আর মিটিমিটি হাসছে।
.
- আপু আমার মোবাইল টা দিন।
- বাব্বা আমার বরটা তো খুব ভদ্র হইছে।
- আপু ফোন দিন।
- চল আমার সাথে।
- কই?
- ঘুরতে যাব।
- এখন পারবো না।
- থাপ্পড় খেলেই পারবি।
- আচ্ছা চলুন,,
.
অতঃপর আজ আমাকে বাধ্য হয়ে ওর সাথে যেতে হচ্ছে। কিছুদূর যেতেই,,,
- ওই একটু কোলে নে তো, পা টা খুব ব্যথা করছে।
- ব্যথা করছে কেন?
- জানলে কি আর তোকে বলতাম।
- আপু আমি পারবো না, গেলাম।
.
তারপর আমি চলে আসলাম ওখান থেকে। ওকে রেখেই, আমি জানি না ওর কি হইছে, ও আজ এমন করছে কেন?
.( দুজনের কথা)
.
নীল চলে গেছে প্রেমাকে কে রেখে, দৌড়েই চলে গেছে একপ্রকার। আর প্রেমা এখন একপা দুপা করে বাসার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
আর প্রেমার চোখ দিয়ে টপটপ পানি পড়ছে।
.
আজ কেন কাঁদছে ও, সেদিন তো নিজের বয়ফ্রেন্ড কে অন্য মেয়ের সাথে দেখলো তবুও ও কোনো রকম করলো না। আর আজ নীল ওকে রেখে চলে গেছে আর ওকে কোলে নেয়নি তার জন্য প্রেমা কেন কাঁদছে?
.
হুম, সেদিন ওই ছেলেটির প্রতি ওর কোনো ভালবাসা ছিলো না, আর আজ নীলের প্রতি ওর ভালবাসা আছে। কারণ এ কয়দিন নীল যেভাবে ওর পেছনে পরেছিল আর যা কিছু করছে ওর জন্য সেটা ওর আগের ভেগে যাওয়া বয়ফ্রেন্ড তার কিচ্ছু করেনি। আর তার জন্যই আজ নীলের জন্য ওর মনে ভালবাসা জমে গেছে। আজ সেই ছোটবেলার স্মৃতি গুলো প্রেমার খুব মনে পরছে। আজ ওর নীলকে খুব ভালবাসতে ইচ্ছে করছে কিন্তু পারছে না, মুখ ফুটে আজ বলতে পারছে না নীল আমি তোকে খুব ভালবাসি।
.
তারপরের দিন,,,
প্রেমা কলেজ চলে গেছে, ও হয়তো জানে না আজ নীল চলে যাবে। কারণ আমি ওকে বলিই নাই আমি আজ চলে যাব।
.
১১ টার দিকে এখান থেকে চলে যাওয়ার জন্য রওনা হলাম। ১ মাসের ছুটি নিয়ে আসছি। আজ ঢাকা ছেড়ে এখানে আসছি ছাব্বিশ দিন হলো, একদিন আমাদের বাসায় আর ওদের বাড়িতে পচিঁশ দিন। বাকি আছে আর চারদিন। তিনদিন আমার বাড়িতে থাকবো তারপরের দিন চলে যাব।
.
এখান থেকে এখন স্টান্ড পর্যন্ত হেটেই যেতে হবে। প্রায় এক কিলোমিটার হাটতে হবে, উফফফ হায়রে কপাল, এখানে কেন রাস্তা পাকা করলো না। তবে রিক্সা চলে, অনেক ঝাকুনি খেতে হয় এ রাস্তায়, তাই হেটে যাওয়াই ভালো।
.
মাথা নিচু করে ধীরে ধীরে হাটতে লাগলাম,, কোনো দিকে ভালো করে খেয়াল না করে,,
.
.( ওর বাড়িতে)
.
- কি রে প্রেমা আজ এতো আগেই চলে আসলি কলেজ থেকে?
- ক্লাস নেই তাই চলে আসছি।
- ওহ্,
- কিন্তু মা নীল কে দেখলাম রাস্তায়,, কই যাচ্ছে? স্টান্ডে যাচ্ছে? আসুক আজ আমাকে না নিয়েই গেছে।
- ও তোকে দেখেনি?
- দেখেনি বোধ হয়, বান্ধুবীরা একসাথে রিক্সায় আসছি তো তাই মনে হয় খেয়াল করেনি।
- ওহ্,
- কই যাচ্ছে?
- ঢাকায়,
- মানে!!!!
- ও চলে গেছে একটু আগে।
- না,,, তুমি কি বলছো? ও যেতে পারে না।
- কেন?
- ও আমার, আমি ওকে ভালবাসি, আমি ওকে যেতে দেব না ( দিছে স্টান্ডের দিকে দৌড়)
.
ওর আন্দাজ মতো এখনো নীল যেতে পারেনি। কারণ ও হেটে যাচ্ছে আর প্রেমার ধারণা অনুযায়ী ও দৌড়ে ওকে ধরতে পারবে।
ওকে প্রেমার আটকে রাখার দরকার নেই, ওকে এখন থামানোর কারণ হলো, ওর মনের কথা নীলকে বলে দেওয়া।
.
অনেক দূর আসলো এখনো পেল না, তাই আরও প্রাণপণে ছুটতে লাগলো। স্টান্ডের কাছাকাছি গিয়ে স্বস্তির নিশ্বাস ফেললো প্রেমা,, শয়তানটা এখনো যায়নি, বাসের অপেক্ষা করছে,,
.
- ঠাস,
- আপু আমাকে মারলেন কেন?
- চুপ, আমাকে না বলে কেন আসলি?
- বলার কি আছে,, আমি তো একটা আপদ তাই না?
- তুই সত্যিই একটা আপদ,,
- সেদিন থেকে আজ পর্যন্ত এতগুলো থাপ্পড় না মারলেই পারতেন।
- বেশ করছি, আরও কয়েক টা দেব এখন, যদি আরেক বার আপনি করে বলো।
- তাহলে কি বলবো?
- বউকে কি করে বলতে হয়ে সেটা শিখিয়ে দিতে হবে, তুমি করে বলবা।
- কে বউ?
- আমি।
- কার?
- তোমার।
- না।
- কেন? ( কান্না করে দিছে)
- বউ হতে চাইলে, এখন তুমি আমাকে প্রপোজ করবে।
- আচ্ছা করছি,, হনুমান কোথাকার।
- হুম,,
.
অতঃপর লোকালয় থেকে দূরে গিয়ে,,
.
- কি দিয়ে প্রপোজ করবো?
- আপাতত তোমার খোপার ফুল টা দিয়ে করো।
- ইসসসস শখ কত!!
- তাড়াতাড়ি,,,
- আই লাভ ইউ জামাই (হাটু গেড়ে নিচু হয়ে)
- হাহাহা,,
- হাসলে কেন?
- প্রপোজ স্টাইল টা দারুণ হইছে।
- মানে!!!
- কেউ হয়তো এখনো বিয়ের আগে, আই লাভ ইউ জামাই, বলে প্রপোজ করে নাই।
- আমরা তো সেই ছোটবেলা থেকেই জামাই বউ তাই না।
- তা ঠিক,, আর তোমাকে না এখন,,, বউ বউ লাগছে।
- আপু বলবে না কিন্তু আর!
- ধুর বউকে কেউ আপু বলে নাকি?
- ঠিক,।

No comments

Powered by Blogger.